জৈনধর্মের প্রবর্তক এবং প্রচারক | শ্বেতাম্বর ও দিগম্বর | জৈন ধর্মগ্রন্থ দ্বাদশ অঙ্গ | জৈন সম্মেলন

jainism details in Bengali


খ্রীস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ভারতে প্রচলিত বৈদিক ধর্মের বিরুদ্ধে প্রচলিত ধর্মমতগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল জৈনধর্ম। এখানে জৈনধর্ম সম্পর্কে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়েছে। যে কোন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় এখান থেকে প্রশ্ন আসবেই। নিম্নে জৈনধর্ম সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
Table Of Content (toc)

  • জৈনধর্মের প্রবর্তক হলেন - ঋষভনাথ।
  • খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে জৈনধর্মের প্রচারক— মহাবীর।
  • মহাবীরের প্রকৃত নাম— বর্ধমান।
  • ২৩তম তীর্থঙ্কর হলেন— পার্শ্বনাথ। 
  • ২৪তম তীর্থঙ্কর হলেন— মহাবীর।
  • মহাবীরের জন্ম— খ্রিস্টপূর্ব ৫৪০।

  • মহাবীরের জন্মস্থান— বৈশালীর কুণ্ডগ্রাম।
  • মহাবীরের পিতার নাম— সিদ্ধার্থ (জ্ঞাতৃক উপজাতির প্রধান)। 
  • মহাবীরের মাতার নাম— ত্রিশলা (লিচ্ছবি রাজকন্যা)
  • সন্ন্যাস গ্রহণ করেছিলেন— ৩০ (তিরিশ) বছর বয়সে।
  • তপস্যার সময়কাল— ১২ (বারো) বছর।
  • মহাবীরের গুরুর নাম— দেবচন্দ্র। 
  • মহাবীরের ভাইয়ের নাম— নন্দীবর্ধন।
  • প্রথম বিবাহ করেন— যশোদা নামক মহিলাকে।
  • তপস্যা লাভের পর তাঁর নাম হয়েছিল— কেবলিন বা সর্বজ্ঞ/জিন বা জিতেন্দ্রিয়।
  • তপস্যার স্থল- ঋজুপালিকা নদীর ধারে জুম্ভিকগ্রামের শালগাছের নীচে।
  • মহাবীরের প্রথম শিষ্যের নাম— যামেলি।
  • মহাবীরের মৃত্যুকাল— ৪৬৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রাজগৃহের পাবানগরে । 
  • জৈন ধর্মগ্রন্থ— রত্নমালিকা, কল্পসূত্র এবং দ্বাদশ অঙ্গ।

জৈনধর্ম সম্প্রদায়

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজত্বকালে উত্তর ভারতে এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে বহু জৈন ধর্মাবলম্বী জৈন সন্ন্যাসী ভদ্রবাহুর নেতৃত্বে উত্তর থেকে দক্ষিণ ভারতে চলে আসেন। তাঁদের এই অভিপ্রায়ণকে কেন্দ্র করে জৈনদের মধ্যে দুটি সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয়। এই দুটি সম্প্রদায় হল (১) শ্বেতাম্বর (২) দিগম্বর।

১। শ্বেতাম্বর

উত্তর ভারতে যে সকল জৈন সন্ন্যাসী থেকে যান, তাঁরা মহাবীরের পূর্ববর্তী পার্শ্বনাথের অনুশাসন অনুসরণ করে ধর্মাচরণ করতেন। এদের বলা হয় শ্বেতাম্বর জৈন। এরা সাদা বস্ত্র পরিধান করতেন।

২। দিগম্বর

জৈন সন্ন্যাসী ভদ্রবাহুর প্রভাবে দাক্ষিণাত্যে জৈন সন্ন্যাসীরা ২৪তম জৈন তীর্থঙ্কর মহাবীরের অনুশাসনগুলি মেনে চলে ধর্মাচরণ করতেন। এরা কোনো গ্রন্থি বা বস্ত্র পরিধান করতেন না। এদের বলা হত দিগম্বর জৈন। দিগম্বর জৈনরা কঠিন প্রায়শ্চিত্বে বিশ্বাস করতেন, যা কেবলমাত্র নিজের শরীরকে শাস্তি দিয়ে প্রাপ্ত হয়। 

জৈন ধর্মগ্রন্থ - দ্বাদশ অঙ্গ

আনুমানিক 300 খ্রিস্টপূর্বাব্দে স্থূল ভদ্রের উদ্যোগে পাটালিপুত্রে প্রথম জৈন সংগীতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এখানে জৈন ধর্মের উপদেশ গুলি 12 টি খন্ডে সংকলিত হয় এটি দ্বাদশ অঙ্গ নামে পরিচিত। 

জৈনধর্মের দ্বাদশ অঙ্গ (১২টি) হল

১। আচারঙ্গ,  ২। সুত্রক্রমঙ্গ,  ৩। স্থানাঙ্গ,  ৪। সমবায়ঙ্গ, ৫। বাক্যপ্রাইনাপ্তি,  ৬। ধর্ম-কথাঙ্গ, ৭। উপাসক অর্ধ্যানঙ্গ,  ৮। অস্থক্রদাসঙ্গ,  ৯। অনুত্তরাপদাকাঙ্গ,  ১০। প্রশ্নব্যাকাবণাঙ্ক, ১১। বিপাকাসুক্রাঙ্গ এবং ১২। দ্রুষ্টিপ্রভেদাঙ্গ


জৈন ধর্ম সম্মেলন

প্রথম সম্মেলন

  • সম্মেলনের স্থান- পাটলিপুত্ৰ
  • সম্মেলনের সময়কাল - খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকের শুরুতে।
  • সভাপতি - স্থলবাহু
  • উল্লেখযোগ্য দিক - ১২টি নতুন অঙ্গ (দ্বাদশঅঙ্গ) যোগ করে আগেকার হারানো ১৪টি পূর্বের স্থানে বসানো হয়। এগুলি শুধু শ্বেতাঙ্গ সম্প্রদায় গ্রহণ করেছিল এবং দিগম্বর সম্পূর্ণরূপ পরিত্যাগ করেছিল। 

দ্বিতীয় সম্মেলন

  • সম্মেলনের স্থান- বলভী
  • সম্মেলনের সময়কাল - খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে
  • সভাপতি - দেবার্ধি ক্ষমাশ্রমণ
  • উল্লেখযোগ্য দিক - দ্বাদশ অঙ্গের পুনর্মূল্যায়ন করা হয় এবং ১২টি উপাঙ্গ সংকলন করা হয়েছিল। 

________________________________________________

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad