বাক্য
বাক্য কাকে বলে ও তার প্রকারভেদ।
উত্তর : যে পদ বা পদ সমষ্টি দ্বারা কোনো পূর্ণ মনোভাব ব্যক্ত করা হয়, সে পদ বা
পদসমষ্টিকেই বাক্য বলে।
যেমন : আমরা গতকাল ক্রিকেট খেলা দেখতে মাঠে গিয়েছিলাম।
ক) বাক্য কাকে বলে? গঠন অনুসারে বাক্য কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ আলোচনা।
উত্তর : যে পদ বা পদ সমষ্টি দ্বারা কোনো বক্তার পূর্ণ মনোভাব ব্যক্ত করা যায়, সে পদ বা পদসমষ্টিকেইবাক্য বলে। যেমন : রাম ভালো ছেলে।
গঠন অনুসারে বাক্য তিন প্রকার। যথা-
সরল বাক্য :--
যে বাক্যে একটি মাত্র উদ্দেশ্য বা কর্তা এবং একটিমাত্র বিধেয় বা সমাপিকা ক্রিয়া
থাকে, তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন : খোকা আজ খেলতে গিয়েছে। এখানে ‘খোকা’
উদ্দেশ্য বা কর্তা এবং ‘গিয়েছে’ বিধেয় বা সমাপিকা ক্রিয়া।
জটিল বাক্য :--
যে বাক্যে একটি প্রধান বাক্যের সঙ্গে এক বা একাধিক আশ্রিত বাক্য পরস্পর
সাপেক্ষভাবে যুক্ত হয়; তাকে জটিল বাক্য বলে। এ বাক্যের আরেক নাম মিশ্র বাক্য।
যেমন : যে পরিশ্রম করে, সে সুখ লাভ করে। এখানে আশ্রিতবাক্য ‘যে পরিশ্রম করে’
এবং প্রধান খন্ডবাক্য ‘সে সুখ লাভ করে।’ এ দুটি খন্ডবাক্য পরস্পর সম্পর্কিত হয়ে
এখানে একটি পূর্ণ বাক্য গঠন করেছে। জটিল বাক্য সাধারণত যে, সে; যারা, তারা;
যিনি, তিনি; যখন, তখন; ইত্যাদি সাপেক্ষ সর্বনাম দ্বারা যুক্ত থাকে।
যৌগিক বাক্য :-
পরস্পর নিরপেক্ষ দুই বা ততোধিক সরল বা জটিল বাক্য যখন কোনো অব্যয় বা যতি চিহ্ন
দ্বারা যুক্ত হয়ে একটি অর্থ পূর্ণ বাক্য গঠন করে, তখন তাকে যে․গিক বাক্য বলে।
যৌগিক বাক্যের অন্তর্গত বাক্যগুলো ও, এবং, কিন্তু, অথবা, নতুবা, অথচ, কিংবা, বরং,
তথাপি প্রভৃতি অব্যয় দ্বারা সংযুক্ত হয়। যেমন : ক. তুমি যাও, আমি আসছি। খ.শফিক
এবং সিফাত আজ নন্দন পার্কে বেড়াতে যাবে।
হয়েছে। যথা—
খ) অর্থ অনুযায়ী বাক্য কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ আলোচনা কর।
উত্তর : অর্থ অনুযায়ী বাক্যকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। তবে একে সাধারণত সাতটি ভাগে ভাগ করাহয়েছে। যথা—
নির্দেশাত্মক বাক্য :--
যে বাক্য দ্বারা সাধারণভাবে কোনোকিছু বর্ণনা বা বিবৃত করা হয়, তাকে নির্দেশাত্মক
বা বিবৃতিমূলক অথবা বর্ণনাত্মক বাক্য বলে। যেমন :-
- ক. আকাশে পাখি উড়ছে।
- খ. গাছে গাছে ফুল ফুটেছে।
অনুজ্ঞাসূচক বাক্য :--
যে বাক্য দ্বারা কোনো প্রকার আদেশ, নির্দেশ, অনুমতি, উপদেশ, অনুরোধ, নিষেধ বা
আমন্ত্রণ প্রকাশ পায়, তাকে অনুজ্ঞাসূচক বাক্য বলে। যেমন :-
- ক. পাখিটি দেখ।
- খ. তুমি তাড়াতাড়ি বাড়ি যাও।
- গ. তুমি এবার যেতে পার।
- ঘ. প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠেই হাতমুখ ধুয়ে পড়তে বসবে।
প্রার্থনাসূচক বাক্য :--
যে বাক্য দ্বারা কোনো প্রকার আকাক্সক্ষা, ইচ্ছা বা প্রার্থনা প্রকাশ পায়, তাকে
প্রার্থনাসূচক বাক্য বলে। যেমন :-
- ক. তুমি বেঁচে থাক।
- খ. হে প্রভু ! আমাকে এই বিপদ থেকে রক্ষা কর।
- গ. আমি যেন প্রতিদিনই এভাবে তোমাকে দেখতে পারি।
প্রশ্নাত্মক বাক্য :--
যে বাক্য দ্বারা সরাসরি কোনোকিছু জানতে চাওয়া হয়, তাকে প্রশ্নাত্মক, প্রশ্নবোধক
বা প্রশ্নসূচক বাক্য বলে। যেমন :-
- ক. তুমি কোথায় যাচ্ছ?
- খ. তোমার নাম কী?
- গ. তুমি কার ছেলে?
কার্যকারণাত্মক বাক্য:--
যে বাক্যে কোনো প্রকার শর্ত, কারণ বা নিয়মের কথা উল্লেখ থাকে, তাকে
কার্যকারণাত্মক বাক্য বলে। যেমন:-
- ক. তুমি নিয়মিত লেখাপড়া করলে অবশ্যই পাস করবে।
- খ. সূর্য উঠলেই সারা মাঠে আলো ছড়িয়ে পড়বে।
সন্দেহদ্যোতক বাক্য :--
যে বাক্য দ্বারা কোনো প্রকার সংশয়, আশঙ্কা, অনিশ্চয়তা বা সন্দেহ প্রকাশ পায়, তাকে
সন্দেহদ্যোতক বা সন্দেহাত্মক বাক্য বলে। যেমন -
- ক. আমি কাল একবার তোমাদের ওখানে যেতে পারি।
- খ. আগামীকাল কলেজ বন্ধ থাকতে পারে।
বিস্ময়সূচক বাক্য :--
যে বাক্য দ্বারা কোনো প্রকার বিস্ময়, শোক, দুঃখ, কষ্ট, আনন্দ, বেদনা, প্রশংসা বা
করুণা প্রকাশ পায়, তাকে বিস্ময়সূচক বাক্য বলে। যেমন :-
- ক. বাহ ! তুমি তো খুব সুন্দর করে সেজেছো।
- খ. উহ্ ! কী প্রচন্ড গরম।
________________________________________________
- শব্দ ও তার শ্রেণিবিভাগ
- বাংলায় কুইজ টেস্টে অংশ নিন।
- ধ্বনির আগম ও তাঁর শ্রেণীবিভাগ
- স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ কাকে বলে?
- বৌদ্ধ ধর্ম ও গৌতম বুদ্ধ
________________________________________________