চর্যাপদের আবিষ্কার | পুঁথির নামকরণ | চর্যাপদের টীকাকার | চর্যাপদের কবি পরিচয় | নবচৰ্যাপদ

চর্যাপদের আবিষ্কার, কবি পরিচয় এবং টীকাকার

প্রাচীন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের একমাত্র নিদর্শন হল চর্যাপদ। এতে বৌদ্ধ সহজিয়া সাধকদের আধ্যাত্মিক যোগসাধন চর্যাপদের মূলকথা। এই সব তত্ত্বকথাকে পরিস্ফুট করতে গিয়ে সেই সময়ের নানা ছবি ফুটে উঠেছে। নিম্নে চর্যাপদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

Table Of Content (toc)

চর্যাপদ কবে আবিষ্কৃত হয়েছিল?

  • রাজেন্দ্রলাল মিত্র ১৮৮২ সালে সংস্কৃত ভাষায় লেখা বিভিন্ন বৌদ্ধ পুঁথির তালিকা প্রকাশ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর উপর বাংলা, বিহার, আসাম ও উড়িষ্যার পুথিসন্ধান ও সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
  • হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালে যান ১৮৯৭, ১৮৯৮ ও ১৯০৭ সালে। এই তিনবার যাতায়াতে বেশ কয়েকটি পুঁথি আবিষ্কার করেন, তার মধ্যে চর্যাপদ একটি।
  • হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থশালা থেকে চর্যাপদের পুঁথিটি আবিষ্কার করেন। ১৯১৬ সালে অন্যান্য তিনটি পুঁথির সঙ্গে (সরহব্রজের দোহা, কৃষ্ণাচার্যের দোহা ও ডাকার্নব) একত্রে ‘হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা’ নামে বঙগীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশ করেন।
  • চর্যাপদের পুঁথি আবিষ্কৃত হয় ১৯০৭ সালে। নেপালের রাজ দরবারের গ্রন্থাগার থেকে। আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।
  • হরপ্রসাদ শাস্ত্রী চর্যার যে পুথিটি আবিষ্কার করেন, সেটি নেপালের দরবার-গ্রন্থাগারেই (রাষ্ট্রীয় অভিলেখালয়) এখনো আছে। নেপালের ক্যাটালগে তার নম্বর : ১৯৯৪/৪০২। তার নাম : চর্যাচর্য্যটীকা।
  • হরপ্রসাদ নেপালের গ্রন্থাগারে যে পুথি দেখেছিলেন, সেটি আনতে পারেননি, তার প্রতিলিপি এনেছিলেন। তারই সাহায্যে তিনি 'চর্যাচর্য্যবিনিশ্চয়' সম্পাদনা ও প্রকাশ করেছিলেন। এখন সেই প্রতিলিপি আছে এশিয়াটিক সোসাইটিতে। ক্যাটালগে তার নম্বর : ৮০৬৩।

চর্যাপদের সম্পাদনা ও প্রকাশ

  • ১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়।
  • হরপ্রসাদ চর্যার পুথির নাম দেন চর্যাচর্য্যবিনিশ্চয়। এছাড়া আরও তিনটি পুথি একই সঙ্গে প্রকাশিত হয় সরোজবজ্রের দোহাকোষ, কৃষ্ণাচার্যের দোহাকোষ এবং  ডাকার্ণব ।
  • এই চারটি পুথি একত্রে যে গ্রন্থে প্রকাশিত হয় তার নাম ‘হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা’।

>>  আরও জানুন >> অপিনিহিতি , অভিশ্রুতি, ব্যঞ্জনসংগতি, নাসিক্যিভবন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। 

চর্যাপদের পুথির নামকরণ 

  • হরপ্রসাদ শাস্ত্রী পুঁথির নামকরণ করেছিলেন চর্যাচর্য্যবিনিশ্চয়। পুঁথির কোথাও এর উল্লেখ নেই। অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এই নামটি গ্রহণ করার পক্ষপাতী ছিলেন।
  • বিধুশেখর শাস্ত্রী পুঁথির নামকরণ করেছিলেন আশ্চর্য্যচর্যাচয়। পুথির বস্তুনির্দেশক শ্লোকে এই নামটি রয়েছে। যদিও নাম হিসাবে নয়, সাধারণ বাক্যাংশ হিসাবে রয়েছে।
  • ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী পুঁথির নামকরণ করেছিলেন চর্যাশ্চর্য্যবিনিশ্চয়।
  • চর্যাগীতিকোষবৃত্তি : প্রবোধচন্দ্র বাগচী তিব্বতি অনুবাদ আবিষ্কার করেন। এই পুথির পুষ্পিকায় চর্যাপুথির নাম, টীকাকারের নাম, তিব্বতি অনুবাদকের নামসহ আরো কতকগুলো মূল্যবান তথ্য পাওয়া যায়। এই তথ্য থেকে জানা যায়, বুধগণ একশত চর্যার কোষ সংকলন করেছিলেন। আচার্য মুনিদত্ত তার অর্ধসংখ্যক অর্থাৎ ৫০টি পদের টীকা রচনা করেন। এই টীকাগ্রন্থের নাম ‘চর্যাগীতিকোষবৃত্তি’। ‘বৃত্তি' শব্দের অর্থ ‘টীকা'। সেদিক থেকে মূল চর্যার পুঁথির নাম হওয়া উচিত ‘চর্যাগীতিকোষ।
  • সুকুমার সেন পুঁথির নামকরণ করেছিলেন চর্যাগীতি পদাবলী (গ্রন্থনাম), চর্যাগীতিকোষ।

চর্যার পুঁথি পরিচয়

  • পুথিটি তালপাতায় পুরনো বাংলা অক্ষরে লেখা।
  • মূল পুঁথিতে পাতার সংখ্যা ৬৯টি।
  • তিব্বতি অনুবাদের সূত্র থেকে মনে হয়, এরপর আরও একটি পাতা ছিল।
  • ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮ ও ৬৬ নম্বর পাতা পাওয়া যায়নি।
  • চর্যার পুঁথিতে গান ছিল ৫০টি।
  • চর্যাপদে ২৩ নম্বর পদের অর্ধেক এবং ২৪, ২৫ ও ৪৮ নম্বর পদ পাওয়া যায় নি।
  • সুতরাং চর্যাপদের মোট ২৪জন পদকর্তার সাড়ে ৪৬টি পদ পাওয়া গেছে। 
  • পাতার দুইদিকের পৃষ্ঠাতেই লেখা। প্রতি পৃষ্ঠায় ৫টি পঙক্তি।

>>আরও পড়ুন >> স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। 

চর্যাপদের টীকা প্রসঙ্গ

  • সংস্কৃত ভাষায় লেখা চর্যার টীকার নাম হল নির্মলগিরা টীকা। টীকাকার হলেন মুনিদত্ত। এই টীকা না থাকলে চর্যাপদের মত দু'রকম অর্থবোধক সন্ধ্যা ভাষার এই গানগুলির অর্থ বোঝা যেত না। এগুলির হেঁয়ালি ভাঙা যেত না। পরিবেশিত বৌদ্ধ দর্শন ও তার তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা বোঝা দূরূহ হতো। মূলে নেই, এমন কিছু চর্যাপদের পদ্যাংশ মুনিদত্ত তার টীকাতে প্রয়োগ করেছেন, যা থেকে পরবর্তী গবেষকেরা ধরতে পেরেছিলেন যে নেপাল অঞ্চলে আরো বহু চর্যাপদ ছড়িয়ে আছে। আর সেই সূত্র ধরেই নব চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয়।
  • এই টীকাতেই তিনি মূল চর্যাগানগুলি (৫০টি) সম্পূর্ণভাবে তুলে ধরেছেন, যা না দিলে আমরা জানতে পারতাম না যে চর্যাগীতির মতো প্রাচীনতম বাংলা ভাষায় লেখা এমন ৫০টি গান আছে, যেগুলো দশম থেকে দ্বাদশ শতকেই বাঙালিরা রচনা করেছিলেন।

চর্যাপদের টীকার অনুবাদ

  • চর্যার টীকার তিব্বতি অনুবাদক হলেন কীর্তিচন্দ্র। তিব্বতি অনুবাদ আবিষ্কার করেন ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী। তিব্বতি অনুবাদের সম্পাদক ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী ও শান্তি ভিক্ষু।
  • হরপ্রসাদের আবিষ্কৃত পুথিটি যে মূল চর্যাসংকলন (চর্যাগীতি) নয়, তা যে মূল চর্যাসহ টীকাগ্রন্থ, তা এই তিব্বতি অনুবাদ থেকেই জানা যায়।
  • হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কৃত টীকাগ্রন্থে টীকাকারের নাম নেই। এই তিব্বতি অনুবাদ থেকেই জানা যায়, টীকাকারের নাম মুনিদত্ত।
  • এই অনুবাদ থেকে জানা যায়, মূল চর্যাগীতিকোষে ১০০টি পদ ছিল। তা থেকে মুনিদত্ত ৫০টি পদ বেছে নিয়ে বর্তমান টীকাটি রচনা করেছিলেন। হরপ্রসাদ আবিষ্কৃত পুথিতে যে সাড়ে ৩টি পদ হারিয়ে হারিয়ে গেছে, এই অনুবাদ থেকেই তার ভাববস্তু জানা যায়।

>> আরও পড়ুন >> মুণ্ডমাল শব্দ, জোড়কলম শব্দ, যোগরূঢ় শব্দ, লোকনিরুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। 

চর্যাপদের কবি পরিচয়

  • মূল চর্যাপদের কবি ছিলেন ২৪ জন।
  • এর মধ্যে লাড়ীডোম্বী নামক কবির পদ টীকাকার মুনিদত্ত বাদ দিয়েছিলেন।
  • এছাড়া প্রাপ্ত চর্যাপদের খণ্ডিত পুথির ২৫ নম্বর পদটি যে পাতায় ছিল, সেটি হারিয়ে গেছে। পরের পাতায় সংস্কৃত টীকার অংশটুকু আছে। তা থেকে জানা যায়, ওই পদের কবি হলেন তন্ত্রীপাদ। কিন্তু আজও তন্ত্রীপাদের পদটি পাওয়া যায় না। সুতরাং প্রাপ্ত পুথিতে কবির সংখ্যা ২২ জন।
  • চর্যা শব্দের অর্থ যা আচরণীয় বা যা অনুষ্ঠেয়।
  • চর্যাপদের আদি কবি বা পদকর্তা হলেন লুইপা। (মুনিদত্তের মতে)
  • সবচেয়ে বেশি পদ রচনা করেছেন কাহ্নপাদ। (১৩টি, পুথিতে আছে ১২টি)
  • ভুসুকুপা নিজেকে বাঙালি বলেছেন।
  • ভুসুকুপা এর অপর নাম শান্তিদেব।
  • নিশ্চিতভাবে বাঙালি বলে প্রমাণিত হয়েছেন যে কবিরা – শবরপা, কুক্কুরীপা, ভুসুকুপা।
  • কাহ্নপা এর পুরো নাম কৃষ্ণচারী কাহ্নপাদ।

চর্যাপদের পদপরিচয়

  • চর্যাপদের অনাবিষ্কৃত পদগুলি হল ২৪ নং (কাহ্নপা), ২৫ নং (তন্ত্রী/তান্তীপা), এবং ৪৮ নং (কুক্কুরীপা )
  • অর্ধপদ পাওয়া যায় যে চর্যার - ২৩ নং (ভুসুকুপা)
  • চর্যাগীতিতে রাগের সংখ্যা ৩২টি। সবচেয়ে বেশি আছে পটমঞ্জরী ১১টি পদ।
  • চর্যার প্রধান ছন্দের নাম পাদাকুলক ছন্দ।
  • চর্যার পদগুলি প্রধাণত পয়ার ও ত্রিপদী পদে রচিত।
  • নরনারীর প্রণয়চিত্র ২৮ নং পদে রয়েছে। (উঁচা উঁচা পাবত...) কবি শবরপাদ।
  • দারিদ্র্যের ছবি রয়েছে ৩৩ নং পদে (টালত মোর ঘর...) - কবি ঢেণ্ঢনপাদ।
  • বুদ্ধনাটকের অভিনয় – ১৭ নং পদ। কবি বীণাপা ।
  • নারীদের নৌকাচালনার উল্লেখ আছে ৪ নং পদে। (কবি- ডোম্বীপাদ)
  • চর্যাপদে দুটি অলংকার দেখা যায় - রূপক ও উৎপ্রেক্ষা। 
  • চর্যাপদে গুরুর কথা ১৩ বার আছে।
  • চর্যাপদ মূলত দশম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে রচনা। তখন বঙ্গদেশে পালবংশের রাজত্বকাল ছিল।

>> আরও পড়ুন >> ভাষা ও উপভাষা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। 

চর্যাপদের ভাষা বাংলা

  • চর্যাপদের ভাষা যে বাংলা, তা প্রথম প্রমাণ করেন সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়।
  • চর্যার ভাষা যে হিন্দি নয়, সে কথা প্রমাণ করেছিলেন সুকুমার সেন।
  • চর্যায় ব্যবহৃত অধিকাংশ প্রবাদই বাংলার নিজস্ব প্রবাদ। যেমন - আপনা মাংসে হরিণা বৈরী।
  • চর্যার যৌগিক ক্রিয়াগুলি বাংলার খাঁটি যৌগিক ক্রিয়া। যেমন - টুটি গেলি।
  • চর্যার ভাষা প্রধানত পশ্চিমবঙ্গীয় বা রাঢ়ি উপভাষার উপর প্রতিষ্ঠিত। যদিও চর্যার ভাষায় বৃহত্তর বঙ্গের একাধিক উপভাষার উপাদান বৰ্তমান।

চর্যাপদের ভাষা সন্ধ্যাভাষা

  • চর্যাপদের ভাষাকে সন্ধ্যাভাষা বলা হয়। এক রকমের সাংকেতিক বচন, যার সাধারণভাবে এক রকমের অর্থ হয়, কিন্তু তার ভেতরের অর্থ স্বতন্ত্র। একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যেই এই ভাষা চলতে থাকে। এই গোষ্ঠীর লোকেরাই তার অর্থ বোঝে, অন্যেরা বোঝে না। সাধারণত গোপনীয়তা রক্ষার জন্যই এই ভাষা ব্যবহৃত হয়। এই রহস্যময় আলো-আঁধারি ভাষায় রচিত বলেই চর্যার ভাষাকে বলা হয় সান্ধ্যাভাষা।


নবচৰ্যাপদ কাকে বলে? 

  • ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত ১৯৬৩ সালে নেপাল থেকে ২৫০টি চর্যাগান আবিষ্কার করেন। যার মধ্য থেকে তিনি ১০০টি পদ বেছে নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নবচর্যাপদ নাম দিয়ে প্রকাশের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু আকস্মিকভাবে তার মৃত্যু হলে ১৯৮৯ সালে ড. অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় নবচর্যাপদ প্রকাশিত হয়।

>> আরও পড়ুন >> ধ্বনি পরিবর্তনের রীতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।

চর্যাপদের গবেষকগন

  • চর্যার হিন্দি অনবাদ ‘দোহাকোষ’ রচনা করেন বাহুল সাংকৃত্যায়ন।(১৯৫৭)
  • চর্যার কয়েকজন বাঙালি গবেষক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী ও শান্তি ভিক্ষু, ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, ড. সুকুমার সেন, ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত এবং ড. তারাপদ মুখোপাধ্যায়।
  • চর্যাপদ এর উপর গবেষণা করেছেন এমন কয়েকজন অবাঙালি ভারতীয় - রাহুল সাংকৃত্যায়ন, রামকৃষ্ণ শুক্লা, বিশ্বনাথপ্রসাদ মিশ্র এবং ধর্মবীর ভারতী।
  • চর্যাগীতি নিয়ে গবেষণা করেছেন এমন কয়েকজন বিদেশি পন্ডিত - (১) Dr. Arnold Bake, (২) Dr. G. Tucci, (৩) Per Kvaerner
  • চর্যার রচনাকাল আনুমানিক দশম থেকে দ্বাদশ শতক।
  • চর্যার বিষয়বস্তু – বৌদ্ধ সহজযান (সহজিয়া) সম্প্রদায়ের চিন্তা, দর্শন ও সাধনপদ্ধতি।
  • চর্যাপদের ফটোমুদ্রণ সংস্করণ প্রকাশ করেন ড. নীলরতন সেন, ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে।

>> আরও পড়ুন >> মানুষের চোখ সম্পর্কিত বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। 

চর্যার পদকর্তাদের পদসংখ্যা

  • চর্যাপদের মোট ২৪জন পদকর্তার সাড়ে ৪৬টি পদ পাওয়া গেছে। ২৪জন পদকর্তার নাম নিচে দেওয়া হল। (১) কাহ্নপা - ১৩টি, (২) ভুসুকুপা - ৮টি, (৩) লুইপা - ২টি, (৪) সরহপা - ৪টি, (৫) কুক্কুরীপা - ৩টি, (৬) শান্তিপা - ২টি, (৭) শবরপা - ২টি, (৮) বিরুআপা - ১টি, (৯) গুডরীপা (গুণ্ডরী) ১টি, (১০) চাটিলপা - ১টি, (১১) কামলিপা(কম্বলাম্বর)- ১টি, (১২) ডোম্বীপা – ১টি, (১৩) মহিণ্ডাপা (মহিত্তা) - ১টি, (১৪) বীণাপা - ১টি, (১৫) আজদেবপা - ১টি, (১৬) ঢেণ্ঢনপা (টেণ্টন)- ১টি, ১৭) দারিকপা - ১টি, (১৮) ভাদেপা – ১টি, (১৯) তাড়কপা - ১টি, (২০) কঙ্কণপা - ১টি, (২১) জঅনন্দিপা - ১টি, (২২) ধামপা - ১টি, (২৩) তন্ত্রীপা – ১টি, (২৪) লাড়ীডোম্বীপা- ০টি।


চর্যাপদের কবিদের নামের সঙ্গে ‘পাদ’ শব্দের যোগ দেখা যায় কেন?

  • ‘পাদ’ শব্দের অর্থ - পূজনীয়, পূজ্য বাচক, গৌরব বাচক।  যার চরণ স্পর্শ করে শ্রদ্ধা জানানো যায়। ‘পাদ’ মানে ধর্মগুরু। সমকালে চর্যাকবিরা শিষ্য-ভক্তমণ্ডলীর কাছে পূজনীয় আচার্য বা গুরু হিসেবে মর্যাদা পেয়েছিলেন। তাই তাদের ভক্তরা তাদের নামের সঙ্গে ‘পাদ’ শব্দটি যোগ করে দিতেন। তদনুসারে মুনিদত্ত টীকা রচনাকালে কবিদের নামের শেষে ‘পাদ’ শব্দ যোগ করেছেন৷
______________________***_______________________

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad