বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস : শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য | Bangla SLST

 

Srikrishnakirton full details for slst

আজকের অলোচ্য বিষয় শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের রচয়িতা, রচনাকাল, প্রকাশকাল, খন্ডের সংখ্যা, কাব্যের চরিত্র ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য দিক সম্পর্কে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে সেই সব দিক গুলি তুলে ধরা হয়েছে যেগুলি SSC Bangla SLST এবং অন্যান্য পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য সম্পর্কে  আলোচনা করা হল।

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সম্পর্কে নতুন পর্ব শুরু করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক প্রস্তুতির জন্য আমাদের এই সাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন। সম্পুর্ন বিনামূল্যে পরীক্ষার প্রস্তুতি দেওয়া হয়  এবং দৈনিক আপডেট পাওয়ার জন্য আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হোন। (alert-success)

  • মধ্যযুগের বাংলা ভাষার প্রথম কাব্য হল ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’। রচয়িতা হলেন বড়ু চণ্ডীদাস। বড়ু শব্দের অর্থ দ্বিজ। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের রচনাকাল চতুর্দশ শতকের মাঝামাঝি।
  • বাংলা সাহিত্যে রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা বিষয়ক প্রথম আখ্যানকাব্য হল শ্রীকৃষ্ণকীর্তন।
  • আবিষ্কার ও প্রকাশকাল - কাব্যটি বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ বাঁকুড়ার কাকিল্যা গ্রামের নিবাসী দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়ালঘরের মাচা থেকে ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে ‘শ্রীকৃকীর্তন’-এর পুথিটি আবিষ্কার করেন। পরে তাঁরই সম্পাদনায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে কাব্যটি প্রকাশিত হয়।
  • পুঁথি পরিচয় - বড়ু চণ্ডীদাসের কাব্যের কাহিনি ভাগবত ও ‘গীতগোবিন্দ’ থেকে গৃহীত। পুঁথিটি তুলোট কাগজের উভয় পৃষ্ঠায় লেখা। পুঁথির প্রথম দুটি পাতা পাওয়া যায়নি।
  • পুথিটির প্রকৃত নাম—‘শ্রীকৃষ্ণ’ বা ‘শ্রীকৃসন্দর্ভ’ (কাব্যমধ্যে প্রাপ্ত ‘চিরকুট’ থেকে)। ‘শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ’ নামটির কথা প্রথম বলেন নলিনীনাথ দাশগুপ্ত। বসন্তরঞ্জন রায় ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামটি দেন।
  • শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের ধরন হল নাট্যধর্মী, আখ্যানধর্মী এবং গীতিধর্মী।
  • শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের খণ্ড সংখ্যা ১৩টি। খণ্ডগুলি হল- জন্ম খণ্ড, তাম্বুল খণ্ড, দান খণ্ড, নৌকা খণ্ড, ভার খণ্ড, ছত্র খণ্ড, বৃন্দাবন খণ্ড, কালীয় দমন খণ্ড, বস্ত্র হরণ খণ্ড, হার খণ্ড, বাণ খণ্ড, বংশী খণ্ড ও রাধাবিরহ।
  • শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের জন্মখণ্ডে আমরা নারদ চরিত্রটিকে পাই। কাব্যের ‘ভারখণ্ডের’ কাহিনি অসম্পূর্ণ। ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্যের ‘তাম্বুল খণ্ড’ থেকে রাধাকৃষ্ণ লীলাকাহিনির সূত্রপাত হয়েছে । কাব্যের দানখণ্ডে কৃষ্ণ দানী সেজেছেন। বৃন্দাবন খণ্ডকে ‘ভাগবতের রাস’ বলা হয়। আর রাধাবিরহকে অনেকেই প্রক্ষিপ্ত মনে করেন।
  • শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের শ্রেষ্ঠ খণ্ড হল রাধাবিরহ। ‘রাধাবিরহ’ খণ্ডের বিষয় হল রাধাকৃষ্বের মিলন এবং রাধার শান্তি, নিদ্রা এবং নিদ্রিত রাধাকে দেখে কৃষ্ণের মথুরা যাত্রার কথা আছে।
  • শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যে মোট ৪১৮টি পদ আছে। সর্বাধিক পদ পাওয়া যায় দান খণ্ডে ১১২টি এবং সর্বনিম্ন পদ পাওয়া যায় হারখণ্ডে ৫টি।
  • শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যে সংকৃত শ্লোকের সংখ্যা ১৬১ টি। সর্বাধিক সংকৃত শ্লোকের সংখ্যা পাওয়া যায় দানখণ্ডে - ৪৬টি।
  • শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের প্রধান চরিত্রগুলি হল রাধা, কৃষ্ণ এবং বড়াই এছাড়াও অপ্রধান চরিত্র গুলি হল নারদ, যশোদা, আইহন, বলভদ্ৰ ইত্যাদি। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের সর্বাধিক নাটকীয় চরিত্র হল রাধা। কাব্যে রাধার বয়স এগারো বছর। রাধার পিতার নাম সাগর। মাতার নাম পদুমা বা পদ্মা এবং স্বামীর নাম হল অভিমন্যু বা আইহন৷
  • দূতী চরিত্র বড়াই হলেন রাধার মাতার পিসি। তিনি রাধার কাছে তিন বার শ্রীকৃষ্ণের প্রেমবার্তা নিয়ে গেছেন।
  • শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যে মোট ৩২টি রাগ-রাগিণী পাওয়া যায়। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি রাগ রাগিণী হল - আহের, মালব, দেশাগ, মালবশ্রী, বসন্ত, গুজ্জরী, মল্লার, কেদার রামগিরি ইত্যাদি। পাহাড়ীআ সর্বাধিক ব্যবহৃত রাগ।
  • শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের ছন্দ রীতি হল অক্ষরবৃত্ত বা মিশ্রকলাবৃত্ত রীতির পয়ার ও ত্রিপদী। 
  • ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে যে সমস্ত খণ্ডে বসন্তকালের উল্লেখ আছে তা হল - তাম্বুলখণ্ড, বৃন্দাবন খণ্ড, বাণ খণ্ড ও বংশী খণ্ড। কাব্যের নৌকাখণ্ডে বর্ষা ঋতুর কথা পাওয়া যায়। দানখণ্ডে গ্রীষ্ম ঋতুর কথা পাওয়া যায়।
  • বড়ু চণ্ডীদাস বাসুলীদেবীর সেবক ছিলেন।
  • শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের প্রবাদ প্রবচন - (ক) ললাটে লিখন খণ্ডন না জাএ।। (খ) আপনার মাঁসে হরিণী জগতের বৈরী।।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad