বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক প্রস্তুতির জন্য আমাদের এই সাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন। সম্পুর্ন বিনামূল্যে পরীক্ষার প্রস্তুতি দেওয়া হয় এবং দৈনিক আপডেট পাওয়ার জন্য আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হোন। (alert-success)
Table Of Content (toc)
সাঁওতাল বিদ্রোহ (১৮৫৫) কবে হয়েছিল এবং নেতৃত্ব কে দিয়েছিলেন?
⇨ সাঁওতালদের নিজস্ব এলাকাকে দামিন-ই-কোহ বলা হত । ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে এক সমীক্ষায় জানা যায় এই এলাকাতে মোট ৪৩৭টি গ্রামে ৪২ হাজার ৭১৫ জন সাঁওতাল বাস করত। অসৎ ব্যবসায়ীরা সাঁওতালদের কাছ থেকে জিনিস কেনার সময় বেশি ওজনের বাটখারা এবং বিক্রির সময় কম ওজনের বাটখারা ব্যবহার করত। এটি ‘কেনারাম বেচারাম নীতি' নামে পরিচিত। ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরবের নেতৃত্বে প্রায় ৪০ হাজার সাঁওতাল ভাগনাডিহির মাঠে মিলিত হয়ে হূল বা বিদ্রোহের শপথ নেয়। সাঁওতাল বিদ্রোহ বা হূলের প্রতীক ছিল শালগাছ। বিদ্রোহের প্রথম দিকে বীর সিং, লিকা মাঝি, কালো প্রামানিক, ডোমন মাঝি প্রমুখেরা নেতৃত্ব দেন । ডালহৌসীর নির্দেশে ইংরেজ সেনাপতি জারভিস সাঁওতালদের দমন করেন। সাঁওতালরা মহেশ দারোগা ও তার সহকর্মীকে হত্যা করেন। সাঁওতাল বিদ্রোহের পর সাঁওতালদের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা নিয়ে সাঁওতাল পরগনার সৃষ্টি হয়।
১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে ফরেস্ট অ্যাক্ট পাশ হয় ৷ সাঁওতাল সমাজে মাঝি ও মুলিয়াদের বিশেষ অধিকারকে সরকার অস্বীকার করলে তারা খেরওয়ার আন্দোলন শুরু করেন।
- আরও জানুন >> ব্রিটিশ ভারতে বিভিন্ন সামাজিক নীতি, আইন ও পরিকল্পনা
কোল বিদ্রোহ কবে হয়েছিল এবং নেতৃত্ব কে দিয়েছিলেন?
⇨ বিহারের অন্তর্গত ছোটনাগপুরে ওঁরাও, মুণ্ডা, হো ইত্যাদি কোল সম্প্রদায়ের লোকেরা বাস করতেন। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের পর কোল উপজাতির উপর জমিদার ও মহাজন শ্রেণীর অত্যাচার বৃদ্ধি পেলে কোলরা বিদ্রোহের পথে যায়। ১৮২০-২১ খ্রিস্টাব্দে পোরাহাটের জমিদার ও ইংরেজ সেনাপতি রওসেজ-এর বিরুদ্ধে চাইবাসার যুদ্ধে কোলরা পরাস্ত হয়। ১৮৩১-৩২ খ্রিস্টাব্দে কোলরা পুনরায় বিদ্রোহ ঘোষণা করে। বুদ্ধ ভগত, জয়া ভগত, বিদ্ৰাই সাঙ্কি, সুইমুণ্ডা প্রমুখ এই বিদ্রোহের নেতা ছিলেন। মানভূম সিংভূম, রাঁচি, হাজারিবাগ, পালামৌ, ছোটনাগপুর ইত্যাদি স্থান এই বিদ্রোহের কেন্দ্র ছিল। কোলরা বহিরাগতদের ‘দিকু’বলত। লর্ড বেন্টিঙ্কের নির্দেশে ক্যাপ্টেন উইলকিনসন কোলদের পরাস্ত করেন।
কোলদের শান্ত করতে সরকার দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্ত এজেন্সি নামে একটি নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করেন। জগদীশ চন্দ্র ঝা এর লেখা 'দ্য কোল রেবেলিয়ান' গ্রন্থ থেকে কোল বিদ্রাহের বিস্তৃত বিবরণ জানা যায়।
- আরও জানুন >> আকবরের রাজত্বকালের উল্লেখযোগ্য দিক
মুণ্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০) কবে হয়েছিল এবং নেতৃত্ব কে দিয়েছিলেন?
⇨ ছোটনাগপুর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় মুণ্ডা আদিবাসীরা বাস করত। মুণ্ডা কথার অর্থ গ্রামপ্রধান । মুণ্ডারা তাদের পূর্বপূরুষদের বলত খুন্দ কটিদার এবং তাদের দখলকরা জমিকে বলত খুদকন্টি। মুণ্ডা নেতা বীরসামুণ্ডা ১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দে মুণ্ডা বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন। রাঁচির উলিহাতু গ্রামে বীরসা জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন সুগানমুণ্ডা। বীরসা মিশনারী স্কুলে পড়াশুনো করেন ও খ্রিস্টান ধর্ম নেন। ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে এক নতুন দর্শনের উদ্ভব করে নিজেকে ধরিত্রীর পিতা বলে ঘোষণা করেন এবং সিংবোঙা বা সূর্যদেবতার উপাসনা প্রবর্তন করেন। বীরসামুণ্ডা মুণ্ডা সম্প্রদায়ের কাছে প্রফেট বা গুরু হয়ে ওঠেন। ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে রাঁচির পুলিশ অধিকর্তা মিথারেস চলকৎ নামক স্থান থেকে বীরসামুণ্ডাকে গ্রেপ্তার করেন ও তাঁর দুবছর জেল হয়। ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি ছাড়া পান। ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে মুণ্ডা বিদ্রোহ শুরু হয়। শৈলরাকার পাহাড়ে এক যুদ্ধে মুণ্ডা সেনাপতি গয়ামুণ্ডা মারা যান । মুণ্ডা বিদ্রোহ উলগলান বা বিপজ্জনক নামে পরিচিত। উলগুলানের নেতা ছিলেন বীরসামুণ্ডা। ১৯০০ খ্রিস্টাব্দের ২ জুন রাঁচির জেলে মাত্র ২৫ বছর বয়সে কলেরায় বীরসামুণ্ডার মৃত্যু হয়।