ভারতীয় ইতিহাসে বিভিন্ন রাজবংশ
Table of content (toc)
মহাপদ্মনন্দ
➤ মহাপদ্মনন্দ ছিলেন নন্দ বংশের প্রতিষ্ঠাতা।
➤ মহাপদ্মনন্দের পর মগধের ৮ জন নন্দবংশীয় রাজা রাজত্ব করেন। এদের সম্বন্ধে বিশেষ কোনাে তথ্য পাওয়া যায়নি।
ধননন্দ
➤ নন্দবংশের শেষ রাজা হলেন ধননন্দ।
➤ শেষ নন্দরাজা ধননন্দ সম্পর্কে গ্রিক ও ভারতীয় সূত্র থেকে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।
➤ গ্রিক লেখকেরা তার বিরাট সামরিক শক্তির উল্লেখ করেছেন। ২০,০০০ অশ্বারােহি, ২ লক্ষ পদাতিক, ২২,০০০ রথ, ৩,০০০ রণহস্তি নিয়ে তাঁর সেনাদল গঠিত ছিল।
➤ ধননন্দের সময় গ্রিক বীর আলেকজান্ডার ভারত আক্রমন করেন।
➤ ধননন্দ ছিলেন অত্যাচারী রাজা। বিশাল সামরিক বাহিনীর জন্য প্রজাদের ওপর বাড়তি কর চাপাতেন।
➤ ধননন্দের মন্ত্রী ছিলেন তক্ষশিলার কূটনীতিকবিদ চানক্য।
➤ চানক্যের প্রকৃত নাম বিষ্ণুগুপ্ত।
Also Read >>
সিপাহী বিদ্রোহ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য (link)
Mauryan Dynasty
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য (৩২১-২৯৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
➤ অত্যাচারী রাজা ধননন্দের ওপর প্রজারা বিক্ষোভ দেখালে কৌটিল্য চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যকে দিয়ে ধননন্দকে সিংহাসন চ্যুত করে মগধে মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠা করেন।
➤ চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যকে গ্রিকরা বলত স্যান্ড্রা কোট্টাস বা মুক্তিদাতা।
➤ ৩০৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আলেকজান্ডারের সেনাপতি সেলুকাস নিকাটোরকে পরাজিত করেন।
➤ সন্ধি অনযায়ী সেলুকাস কাবুল, কান্দাহার, হিরাট এবং বালুচিস্তান চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যকে ছেড়ে দেন।
➤ সেলুকাস মেগাস্থিনিসকে তার দূত হিসেবে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজসভায় প্রেরণ করেন।
➤ মেগাস্থিনিস "ইন্ডিকা" গ্রন্থে তার ভারত সম্পর্কে অভিজ্ঞতার কথা লিপিবদ্ধ করেন।
➤ জৈন শাস্ত্র পরিশিষ্ট-পার্বণ অনুযায়ী জানা যায় চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য জৈন ধর্ম গ্রহণ করেন এবং শেষ জীবনে জৈন পন্ডিত ভদ্রবান্ত্র সঙ্গে মহীশুরের শ্রাবণবেলগােলায় যান এবং সেখানে 'অনশনে প্রাণ ত্যাগ করেন।
বিন্দুসার (২৯৮-২৭৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
➤ বিন্দুসার ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের পুত্র।
➤ তার উপাধি ছিল অমিত্রঘাত।
➤ গ্রিকরা তাঁকে অমিত্ৰচ্যাট বলত।
➤ বিন্দুসারের সময় দক্ষিণ ভারতে মৌর্য সাম্রাজ্যের চুড়ান্ত বিস্তৃতি ঘটে।
➤ বিন্দুসারের আমলে পেট্রোক্লেস নামে এক গ্রিক নাবিক ভারত মহাসাগরে অভিযান করে বহুতথ্য সংগ্রহকরেন।
➤ বিন্দুসার আজীবিক ধর্মের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। পিঙ্গল বৎস নামে একজন আজীবিক ভবিষ্যৎ বক্তা বা জ্যোতিষী তার দরবারে ছিলেন।
অশােক (২৭৩-২৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
➤ অশােক তার ভাইদের হত্যা'করে সিংহাসনে বসেন ২৬৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। এজন্য তাকে বলা হয় চন্ডাশােক’ বা ধর্মাশােক।
➤ অশােক প্রথম জীবনে ছিলেন উজ্জয়িনীর শাসন কর্তা। পরে তক্ষশীলায় প্রজাবিদ্রোহ হলে তাকে সেখানে পাঠানাে হয়।
➤ তক্ষশিলায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে অশােক তার যােগ্যতা দেখান।
➤ কলহনের ‘রাজতরঙ্গিনী’ থেকে জানা যায় কাশ্মীর মৌর্য সাম্রাজ্যের অংশ ছিল।
➤ অশােকের রাজত্বে সর্বপ্রথম উল্লেখযােগ্য ঘটনা ছিল কলিঙ্গ যুদ্ধ।
➤ তাঁর রাজত্বের প্রথম তেরাে বছর তার নীতি ছিল স্বদেশ রাজ্য বিস্তার এবং বিদেশে গ্রীক রাজাদের সঙ্গে মিত্রতা।
➤ অশােকের রাজত্বের অষ্টম বছরে ২৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মতান্তরে ২৬১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কলিঙ্গ যুদ্ধ হয়।
➤ এই যুদ্ধে দেড় লক্ষ মানুষ মারা যায় এবং বহু লােক বন্দী বা নিরুদ্দেশ হয়।
➤ ভব্রু শিলালিপি থেকে জানা যায় যে কলিঙ্গ যুদ্ধের দুবছর পর বৌদ্ধপণ্ডিত উপগুপ্তের নিকট বৌদ্ধধর্মের দীক্ষা নেন। বুদ্ধ ধর্ম ও সদ্যের প্রতি তাঁর বিশ্বাস বেড়ে যায়।
➤ অশােকের সময় পাটলিপুত্রে ২৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তৃতীয় বৌদ্ধসঙ্গীতি অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে সভাপতি ছিলেন মােগলিপুত্র তিস্য।
➤ অশােক তৃতীয় বৌদ্ধসঙ্গীতের পরে কিছু বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে নির্বাচিত করে কিছু স্থানে পাঠান বৌদ্ধধর্ম প্রচারের জন্য।
➤ অশােক শ্রীনগর শহর প্রতিষ্ঠা করেন।
➤ বর্তমান ভোপালে অবস্থিত সাঁচির স্তূপ ও বারানসীর সারনাথ স্তূপ অশোকের স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন।
➤ অশােকের দ্বিতীয় শিলালিখ থেকে জানা যায় তার সাম্রাজ্য দক্ষিণ সীমান্ত চোল, পান্ড, সত্যপুত্র, কেরলপুত্র ইত্যাদি প্রতিবেশি দেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
➤ অশােককে 'প্রিয়দর্শি’ বলা হত।
➤ অশােক বলেছিলেন 'সবে মুনিষেপ্রজা মম' অর্থাৎ সকল মানুষই আমার সন্তান।
➤ রাজপথ নির্মাণ, পথের পাশেবৃক্ষরােপণ, কপখনন, পান্থশালা নির্মাণ, মানুষ ও পশুদের জন্য চিকিৎসালয় স্থাপন এবং সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ঔষধি চারা রােপণ তার সময়ে করা হয়।
➤ দরিদ্র প্রজাদের জন্য সরকারি ত্রাণের বন্দোবস্ত করা হয়। এ ছাড়া অশােক ব্ৰহ্মণ, শ্ৰমণ ও বৃদ্ধদের উদ্দেশ্যে দানধ্যানেরও ব্যবস্থা করেন।
➤ সম্রাটের অভিষেক বার্ষিকীতে কারাগার থেকে বন্দিমুক্তি ও মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত কয়েদিদের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সুযােগ দেওয়া হয়।
➤ তিনি দণ্ডাসমতা ও ব্যবহারসমতার প্রবর্তন করেন।
➤ ফৌজদারি দণ্ডবিধির কঠোরতা হ্রাস করেন।
দশরথ (২৩২-২২৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
➤ দশরথ তার পিতামহ ও পূর্বসুরী অশােকের সামাজিক ও ধর্মীয় নীতি বজায় রাখেন।
➤ সিংহাসনে আরােহণ করার পর তিনি নাগার্জুনী পাহাড়ের তিনটি গুহা আজীবিক সম্প্রদায়ের জন্য উৎসর্গ করেন।
সম্প্রতি (২২৪-২১৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
➤ সম্প্রতি উজ্জয়িনী নগরীকে রাজধানী করে সাম্রাজ্যের পশ্চিমভাগে রাজত্ব করেন।
➤ তিনি জৈন ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন।
শালিক (২১৫-২০২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
➤ গার্গী সংহিতার যুগ পুরাণ বিভাগে তাকে বিবাদপ্রিয়, ও অধার্মিক শাসক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
➤ তিনি জৈন ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন।
দেববর্মন (২০২-১৯৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
➤ তিনি সাত বছর রাজত্ব করেন।
➤ তিনি বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন।
শতধনবান (১৯৫-১৮৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
➤ তিনি অষ্টম মৌর্য সম্রাট ছিলেন। তিনি আট বছর রাজত্ব করেন।
➤ তিনি জৈন ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন।
বৃহদ্রথ (১৮৭-১৮৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
➤ পুষ্যমিত্র শুঙ্গ বৃহদ্রথকে হত্যা করে মৌর্য সাম্রাজ্যের পতন ঘটান।
➤ মৌর্য বংশের শেষ রাজা হলেন বৃহদ্রথ।
Also Read >>
হর্ষঙ্ক বংশ ও শিশুনাগ বংশ (link)