◑ হর্ষঙ্ক বংশ (৫৪৪-৪৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
বিম্বিসার (৫৪৪-৪৯২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
➤ মগধে হর্ষঙ্ক বংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেন বিম্বিসার।
➤ বিম্বিসার গৌতম বুদ্ধের সমসাময়িক ছিলেন।
➤ বিম্বিসারের উপাধি ছিল শ্রেণিক।
➤ আনুমানিক ৫৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বিম্বিসার মগধের সিংহাসনে বসেন।
➤ বিম্বিসারের রাজধানী ছিল রাজগীর।
➤ বুদ্ধচরিত থেকে জানা যায় হর্ষঙ্ক বংশের প্রতিষ্ঠাতা বিম্বিসারের রাজত্বকালেই মগধের সাম্রাজ্য বিস্তার শুরু হয়েছিল।
➤ তিনি কোশল, বৈশালি ও মোদ্রা বংশের বৈবাহিক বন্ধনের মাধ্যমে মগধের ক্ষমতা ও মর্যাদা বৃদ্ধি করেন।
অজাতশত্রু (৪৯৩-৪৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
➤ বিম্বিসারের পুত্র অজাতশত্রু তাঁর পিতাকে হত্যা করে ৪৯৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সিংহাসনে বসেন।
➤ অজাতশত্রুর সময় মগধ ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছায়।
➤ অজাতশত্রুর উপাধি ছিল কুনিক।
➤ অজাতশত্রুর সময় কোশলের সঙ্গে মগধের যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে কোশলরাজ প্রসেনজিৎ পরাস্ত হয়ে তাঁর কন্যা ভজিরাকুমারীর সঙ্গে অজাতশত্রুর বিয়ে দেন।
➤ অজাতশত্রু বৈশালির লিচ্ছবিরাজ চেতকের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হন।
➤ যুদ্ধে বৃজি, মল্ল-সহ ৩৬টি গণরাজ্য অজাতশত্রুর বিরুদ্ধে ও বৈশালির পক্ষে যোগ দিলে অজাতশত্রু কূটকৌশলে গণরাজ্যগুলির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেন এবং জয়ী হন।
➤ অজাতশত্রুর সময় গিরিব্রজ বা রাজগৃহে প্রথম বৌদ্ধ সংগীত অনুষ্ঠিত হয়।
উদয়িন (৪৬০-৪৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
➤ অজাতশত্রুর পরে মগধের সিংহাসনে বসেন উদয়িন বা উদয়ভদ্র।
➤ তাঁর আমলে পাটলিপুত্র মগধ সাম্রাজ্যের রাজধানীতে পরিণত হয়।
➤ উদয়িনের প্রধান কৃতিত্ব হল গঙ্গা ও শোন নদীর সঙ্গম স্থলে অবস্থিত পাটলিপুত্র নগরের নির্মাণ।
➤ ৪৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে উদয়িনির রাজত্বকাল শেষ হয়।
➤ উদয়িনের পর যথাক্রমে অনিরুদ্ধ, মুন্ড, নাগদশক মগধের সিংহাসনে বসেন।
➤ ৪৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত হর্ষঙ্ক বংশ রাজত্ব করে।
➤ হর্ষঙ্ক বংশের শেষ রাজা হলেন নাগদশক।
◑ শিশুনাগ বংশ (৪৩০-৩৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
শিশুনাগ
➤ হর্ষঙ্ক বংশের শেষ রাজা নাগদশককে হত্যা করে তাঁর সভাসদ শিশুনাগ মগধের সিংহাসনে বসেন।
➤ শিশুনাগ বংশের প্রতিষ্ঠাতা শিশুনাগ বৈশালিতে তার রাজধানী স্থানান্তরিত করেন।
➤ অবন্তির রাজা অর্ষকের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য শিশুনাগ কিছুদিন গিরিব্রজে রাজধানী স্থানান্তর করেন।
➤ গৃহযুদ্ধে বিক্ষত অবত্তি মগধের আক্রমনে পরাস্ত ও অধিকৃত হলে শিশুনাগ তাঁর রাজধানী পিতৃরাজ্য বৈশালিতে স্থানান্তর করেন।
➤ তিনি ৪১২-৩৯৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন।
কালাশোক
➤ শিশুনাগের পর মগধের সিংহাসনে বসনে কাকবংশ বা কালাশোক।
➤ তাঁর সময় মগধ উত্তর ভারতের শ্রেষ্ঠ রাজ্যে পরিণত হয়।
➤ কালাশোক বৈশালীতে দ্বিতীয় বৌদ্ধ সংগীতির আয়োজন করেছিলেল।
➤ তিনি মগধের রাজধানী পাকাপাকিভাবে পাটলিপুত্র নগরে স্থাপন করেন।
➤ ৩৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত শিশুনাগ বংশ মগধে রাজত্ব করে।
◑ নন্দ বংশ (৩৪৪-৩২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
মহাপদ্মনন্দ
➤ মহাপদ্মনন্দ কালাশোকের ১০ পুত্র এবং কালাশোককে হত্যা করে মগধের সিংহাসনে বসেন এবং নন্দবংশ প্রতিষ্ঠা করেন।
➤ মহাপদ্মনন্দ একজন জনৈক শুদ্র ছিলেন।
তিনি প্রথম অ-ক্ষত্রিয় রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন।
➤ মহাপদ্মনন্দের উপাধি ছিল একরাট, ‘সর্বক্ষত্রান্তক’ ও ‘দ্বিতীয় পরশুরাম'।
➤ মহাপদ্মনন্দ পাঞ্চাল, কাশি, ইক্ষ্বাকু, অস্মক, মিথিলা প্রভৃতি ক্ষত্রিয় রাজ্যগুলি মগধের অধিনে আনেন।
➤ নন্দবংশের রাজধানী ছিল পাটলিপুত্র।
➤ ঐতিহাসিক রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায় মহাপদ্মনন্দকে উত্তর ভারতের প্রথম ঐতিহাসিক সম্রাট’ বলে অভিহিত করেছেন।
ধননন্দ
➤ মহাপদ্মনন্দের পুত্র ধননন্দ ছিলেন নন্দ বংশের শেষ রাজা।
➤ তার সময় গ্রীক বীর আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করেন।
➤ ধননন্দ অত্যাচারী রাজা ছিলেন।
➤ ধননন্দের মন্ত্রী ছিলেন তক্ষশিলার বিশিষ্ট কূটনীতিবিদ চানক্য। চানক্যের প্রকৃত নাম বিষ্ণুগুপ্ত।
➤ চানক্যের সহায়তায় ৩২৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বংশের শেষ রাজা ধননন্দকে পরাজিত করে মগধে মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন।
Also Read >>