পাল বংশ
গোপাল ৭৫০ খ্রীষ্টাব্দে পাল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলার স্থানীয় মানুষদের দ্বারা মনোনীত হয়ে পাল বংশের রাজা হন। পাল বংশের শ্রেষ্ঠ নৃপতি ছিলেন দেবপাল। পাল শাসনকালে দুই বিখ্যাত বৌদ্ধ ধর্ম পন্ডিত অতীশ দীপঙ্কর ও শান্তরক্ষিত তিব্বতে গিয়েছিলেন।
Table Of Content (toc)
গোপাল (আনুমানিক ৭৫০-৭৭০ খ্রিস্টাব্দ)
➤ তিনি বাংলার প্রথম নির্বাচিত রাজা।
➤ তিনি ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মের অনুরাগী।
➤ বৌদ্ধ দার্শনিক শান্তরক্ষিত তাঁর সমসাময়িক
➤ তাঁর সিংহাসনারোহণের ফলে বাংলা থেকে ‘মাৎস্যন্যায়’ দূর হয়।
➤ তিনি ওদন্তপুরী বিহার নির্মাণ করেন।
ধর্মপাল (৭৭০-৮১০ খ্রিস্টাব্দ)
➤ তিনি ছিলেন প্রাচীন বাংলার সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট।
➤ পাল সাম্রাজ্যকে একটি সর্বভারতীয় সাম্রাজ্যে পরিণত করেন গোপালের পুত্র ধর্মপাল।
➤ আর্যাবর্তের এক ব্যাপক স্থানে তিনি বাংলার আধিপত্য স্থাপন করেন।
➤ তিনি ছিলেন বৌদ্ধধর্মের পৃষ্ঠপোষক।
➤ তিনি মগধে বিক্রমশিলা ও সোমপুরী বিহার স্থাপন করেন।
➤ আর্যাবর্তের সাম্রাজ্য বিস্তারে ত্রিশক্তি দ্বন্দ্বে তিনি প্রতিহাররাজ বৎস ও রাষ্ট্রকূট রাজ ধ্রুব'র নিকট পরাজিত হন।
➤ তাঁর উপাধি ছিল ‘উত্তরাপথস্বামীন’।
দেবপাল (৮১০-৮৫০ খ্রিস্টাব্দ)
➤ তাঁর আমলে পাল সাম্রাজ্যের গৌরব চরমে পৌঁছায়।
➤ তাঁর আমলে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে।
➤ তিনি গুর্জর রাজ মিহিরভোজ এবং রাষ্ট্রকুট রাজ প্রথম অমোঘবর্ষকে পরাজিত করেন।
➤ তাঁর দ্বিতীয় রাজধানী ছিল-‘মুঙ্গের’।
➤ জাভা ও সুমাত্রার শৈলেন্দ্র বংশীয় রাজা বার্লপুত্রদেব নালন্দায় একটি বৌদ্ধমঠ প্রতিষ্ঠার জন্য পাঁচটি
➤ গ্রাম ভিক্ষা চাইলে-দেবপাল তা মঞ্জুর করেন।
➤ আরব পর্যটক সুলেমান তাঁর আমলে ভারতে এসেছিলেন এবং তার সামরিক শক্তির প্রশংসা করেছেন।
➤ তার উপাধি ছিল পরমেশ্বর পরম ভট্টারক মহারাজাধিরাজ।
➤ দেবপালের পরবর্তী শাসকগন হলেন নারায়ণ পাল, রাজ্যপাল, দ্বিতীয় গোপাল এবং দ্বিতীয় বিগ্রহপাল।
প্রথম মহীপাল (৯৮৮-১০৩৮ খ্রিস্টাব্দ)
➤ তিনি ছিলেন পাল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা।
➤ পাল সাম্রাজ্যের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারে তিনি সক্ষম হন।
➤ তাঁর রাজত্বকালেই গজনির সুলতান মামুদ বারংবার ভারত আক্রমণ করেন।
➤ তাঁর আমলে চোল ও কলচুরি আক্রমণ হয়।
➤ তিনি মিথিলা ও বারাণসী জয় করেন।
➤ তিনি ধর্মবিশ্বাসে বৌদ্ধ ছিলেন।
➤ তিনি নালন্দা ও সারনাথে দু'টি বৌদ্ধমঠ এবং কাশীতে হিন্দুমন্দির ও কুমিল্লাতে বিষ্ণুমন্দির নির্মাণ করেন।
➤ মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি তাঁর একটি অন্যতম উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব।
রামপাল (১০৭৭-১১৩০ খ্রিস্টাব্দ)
➤ রামপালকে তৃতীয় পাল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বলা যায়।
➤ তাঁর সভাকবি ছিলেন সন্ধ্যাকর নন্দী।
➤ ‘রামচরিত’ গ্রন্থের রচয়িতা হলেন সন্ধ্যাকর নন্দী।
➤ তিনি রমাবতীতে একটি নতুন রাজধানী স্থাপন করেন।
➤ তিনি চালুক্যদের আক্রমণ প্রতিরোধ করেন।
➤ তিনি কামরূপরাজ ও উৎকলরাজকে পরাস্ত করেন।
➤ গঙ্গা ও করতোয়ার সঙ্গমস্থলে তিনি রামাবতী নগরে রাজধানী স্থাপন করেন।
কুমারপাল (১১৩০-১১৪০ খ্রিস্টাব্দ)
➤ তাঁর সময়ে সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল স্বাধীন হয়ে যায়।
➤ তার মন্ত্রী বৈদ্যদেব কামরুপে বিদ্রোহ করে স্বাধীন রাজ্য ঘোষণা করেন।
➤ কুমারপাল পরবর্তী শাসক ছিলেন তৃতীয় গোপাল যিনি ১১৪০ থেকে ১১৪৪ খ্রী. অবধি শাসন করেছিলেন।
➤ তার পরবর্তী শাসক ছিলেন মদনপাল, তাঁর সময়ে রাঢ়দেশের সামন্ত রাজা বিজয় সেন গৌড় দখল করেন।
➤ শেষ পাল বংশীয় রাজা ছিলেন গোবিন্দ পাল (১১৫৫-৬২ খ্রী.)।
➤ গোবিন্দ পালের সময়ে ১১৬২ খ্রী. পাল বংশের অবসান ঘটে।
Read More>>