গলগি বডির সংজ্ঞা, আবিষ্কার, উৎপত্তি, বিস্তৃতি ও কাজ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
AdminJune 05, 2025
0
table of content (toc)
গলগি বডিস
সংজ্ঞা:
আদর্শ কোশের সাইটোপ্লাজমে নিউক্লিয়াসের নিকট ক্ষরণে অংশগ্রহণকারী একক পর্দা বেষ্টিত চ্যাপটা থলির মতো এবং ক্ষুদ্র গহ্বরের মতো যেসব অঙ্গাণু পরস্পর সমান্তরালভাবে সজ্জিত থাকে, তাদের গলগি বডিস বলে।
আবিষ্কার:
জর্জ ১৮৭৬ সালে প্রথম পর্যবেক্ষণ করেন।
ক্যামিল্লো গলগি ১৮৯৮ সালে নামকরণ করেন।
ডাল্টন এবং ফেলিক্স ১৯৫৪ সালে ইলেকট্রন আণুবীক্ষণিক গঠন সম্পর্কে ধারণা দেন।
উৎপত্তি:
বিজ্ঞানী এসনার এবং নোভিকফ-এর মতানুসারে গলগি বস্তু এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকিউলাম থেকে উৎপন্ন হয়।
বিজ্ঞানী বুচ-এর মতে এটি নিউক্লীয় পর্দা থেকে উৎপন্ন হয়।
ড্যানিয়েলি-এর মতে গলগি বস্তু কোশপর্দা থেকে উৎপন্ন হয়।
বিস্তৃতি:
গলগি বস্তু প্রাণীকোশের সাইটোপ্লাজমে নিউক্লীয় পর্দার সন্নিকটে দলবদ্ধভাবে অবস্থান করে এবং উদ্ভিদকোশের সাইটোপ্লাজমে কিছুটা বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থান করে।
উদ্ভিদকোশের গলগি বস্তুকে ডিকটিওজোম বলে। আদি কোশে এরা অনুপস্থিত।
আদর্শ কোশের মধ্যে সিভনল, মস ও ফার্নের শুক্রাণু এবং স্তন্যপায়ীদের RBC-তে গলগি বডিস থাকে না।
আকারও আয়তন:
গলগি বস্তুর আকার নির্দিষ্ট নেই। এগুলি চ্যাপটা থলির মতো-যাদের ব্যাস 60-70Å, ক্ষুদ্র গোলাকার ভেসিকল-এর মতো-যাদের ব্যাস 30-4Å, বৃহৎ গহ্বরের মতো-যাদের ব্যাস 60-200Å, আবার শাখাপ্রশাখা যুক্ত থলির মতো-যাদের ব্যাস 300-500Å হয়।
ক্ষরণ: গলগ্নি বডি উৎসেচক, হরমোন, মিউকাস, নিউরোসিক্রিটরি পদার্থ ইত্যাদি ক্ষরণ করে। ক্ষরণকারী ভেসিকলগুলি এই কার্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
পরিবহণ: গলগি বডি কোশ-মধ্যস্থ বিভিন্ন পদার্থ উৎসেচক, যোগকলার ধাত্র, ক্ষরিত প্রোটিন ইত্যাদি পরিবহণে সহায়তা করে।
সঞ্চয়: গলগি বডি বিভিন্ন প্রকার খাদ্যবস্তুর সঞ্চয় ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে। গলগি ভ্যাকুওলগুলি এই কাজের সঙ্গে জড়িত।
কোশপ্রাচীর গঠন: কোশ বিভাজনের অ্যানাফেজ দশায় ভেসিকলগুলি বিষুব অঞ্চলে জড়ো হয়ে এবং পরস্পর যুক্ত হয়ে সেল প্লেট গঠন করে এবং তার দু-পাশে পেকটিক পদার্থ ও অন্যান্য পদার্থ জমা করে কোশপ্রাচীর গঠন করে।
কার্বোহাইড্রেট সংশ্লেষ: সরল শর্করা থেকে কার্বোহাইড্রেট সংশ্লেষে গলগি বডির বিশেষ ভূমিকা আছে। উদ্ভিদকোশে পেকটিন, পলিমিউকোপলিস্যাকারাইড সংশ্লেষ গলগি বডির সাহায্যে সম্পন্ন হয়।
লাইসোজোম গঠন: গলগি সিস্টারনি প্রাথমিক লাইসোজোম সৃষ্টি করে।
অ্যাক্রোজোম গঠন: গলগি বডি শুক্রাণুর অ্যাক্রোজোম গঠন করে।